পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট আসন্ন। এরই মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন কর্মী সংগঠনগুলি সোচ্চার হতে শুরু করেছে তাদের দাবিদাওয়া নিয়ে। পিছিয়ে নেই রাজ্যের শিক্ষক সম্প্রদায়। এদিকে রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ ক্ষেত্রে যে অরাজকতা চলছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের একের পর এক রায় এর পরে শিক্ষক নিয়োগের বিভিন্ন দুর্নীতি সামনে আসতে শুরু করে। এসএসসি, প্রাইমারি বোর্ড তথা রাজ্য সরকার বারংবার হোঁচট খেয়েছে বিচারপতির রায়ে। আর ঠিক এর মধ্যেই রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনগুলি তাদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে দাবি তুলছে।
এর মধ্যে অন্যতম হলো রাজ্যের রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষক সম্প্রদায়ের দাবি, বিশেষ করে রাজ্যের এমএসকে, এসএসকে শিক্ষকদের দাবি দাবিদাওয়া। তাদের এই বেতন বৃদ্ধি তথা সম কাজে সম বেতনের দাবি দীর্ঘদিনের। এই দাবি আজকের না। দীর্ঘ দিন ধরে এই শিক্ষকেরা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সংগঠন গড়ে তোলে এবং ছোট বড় বিভিন্ন আন্দোলন এবং পথসভার আয়োজন করে তাদের বেতন বৃদ্ধির দাবিতে। কিন্তু প্রথমদিকে আশ্বাস দিকেও বহু বছর কেটে গিয়েছে, মেলেনি কোনো সুরাহা।
এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, রাজ্যে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাদের কাছেও দাবি তুলে ধরা হয়েছিল এই বেতন বৃদ্ধি নিয়ে। সেই মোতাবেক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের পার্শ্ব শিক্ষক (Para Teacher), বিভিন্ন চুক্তিভিত্তিক অস্থায়ী শিক্ষক শিক্ষিকা তথা এসএসকে, এমএসকে এর শিক্ষক শিক্ষিকাদের ন্যায্য এবং যথাযথ বেতন বৃদ্ধির জন্য আশ্বস্ত করে। যাইহোক, পরবর্তীতে এই বেতন বৃদ্ধি আংশিক হয়েছিল এবং তা পর্যাপ্ত ছিল না। তার ওপরে শিক্ষকদের সব গুলি দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। এই কারণেই তারা ফের রাস্তায় নামতে বাধ্য হয়।
পথে নেমে তারা বিভিন্ন ভাবে আন্দোলন গড়ে তোলে। তার মধ্যে কলকাতায় তারা আন্দোলনের পাশাপাশি বেশ কয়েকবার বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করে। এদিকে যথন পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন তিনি শিক্ষক সমিতিকে বারংবার আশ্বাস দিয়েছিলেন যে এই বেতন ধাপে ধাপে বাড়ানো হবে। সেই আশ্বাস আশ্বাসই থেকে যায়, কেটে গিয়েছে বহু বছর, সাড়া মেলেনি রাজ্য সরকারের।
এদিকে পার্শ্ব শিক্ষক তথা SSK, MSK শিক্ষক সংগঠনের তরফ থেকে রাজ্য এবং কেন্দ্র স্তরে মুখ্যমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে একাধিকবার সাক্ষাৎকারের আয়োজন করা হয়েছিল। বিক্ষোভ তথা আন্দোলন চলাকালীন এক বিকাশ ভবনের সামনে বিষপান করেন রাজ্যের বেশ কয়েকজন পার্শ্ব শিক্ষিকা। যাইহোক, পরবর্তীতে ধীরে ধীরে আন্দোলনের গতি হ্রাস পেতে থাকে।
সামনেই পঞ্চায়েত ভোট, তাই ফের ধীরে ধীরে গতি পেতে থাকে এই শিক্ষক সংগঠনের দাবি এবং আন্দোলন। এরই মধ্যে একবার বারাসাতের তৃণমূল বিধায়ক তথা জনপ্রিয় অভিনেতা চিরঞ্জিত চক্রবর্তী বলেন যে, এই পার্শ্ব শিক্ষক তথা চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক শিক্ষিকাদের জীবন অনেকটা সিনেমা জগতের জুনিয়র আর্টিস্টদের মত। তারা কাজ করেন ঠিকই, হিসাবে তারা সমান সমান কাজ করেন কিন্তু পর্যাপ্ত ন্যায্য বেতন এবং সম্মান কোনোটিই পান না। কিন্তু বিবেচনা করে দেখতে গেলে জুনিয়র আর্টিস্ট ছাড়া কিন্তু সিনেমা অসম্পূর্ণ। আর একেবারে পঞ্চায়েত ভোটের আগেই বিষয়টি আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
যাইহোক, রাজ্য সরকারের তরফ থেকে সরাসরি কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি এখনও এ ব্যাপারে। তবে আশার আলো দেখাই যেতে পারে এই পরিস্থিতিতে। পার্শ্ব শিক্ষক নেতা ভোগীরথ ঘোষ বলেন, তারা শিক্ষকতার কাজ ছাড়াও অনেক নন টিচিং কাজ করে থাকেন এবং কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই তারা। তবুও তাদের প্রতিশ্রুতি এবং আশ্বাস দিয়েও বসিয়ে রাখা হয়েছে, মানা হয় না তাদের দাবিদাওয়া। এখন দেখার বিষয় একটাই, রাজ্য সরকার কতটা মুখ তুলে তাকায় এই শিক্ষকদের প্রতি।
ভবিষ্যতে চাকরি এবং নিয়োগের আপডেট পেতে চান? তবে আজই যুক্ত হয়ে যান আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলের সঙ্গে।
TELEGRAM CHANNEL: JOIN HERE
MORE JOB NEWS: CLICK HERE