WB Govt Scholarship 2025: পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রী ও বেকার যুবকদের জন্য রয়েছে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের বেশ কিছু স্কলারশিপ ও আর্থিক সহায়তা। অনেকেই এই স্কলারশিপের তথ্য না জানায় সুযোগ হাতছাড়া করেন। অথচ এই স্কলারশিপ পেলে পড়াশোনার খরচের পাশাপাশি সরকারি চাকরির ইন্টারভিউয়ের প্রস্তুতি নিতেও আর্থিক সাপোর্ট পাওয়া যায়। আজ আমরা জানবো কোন কোন সরকারি স্কলারশিপ পাওয়া যেতে পারে, কারা এই স্কলারশিপের জন্য যোগ্য, কীভাবে আবেদন করবেন এবং কোন স্কলারশিপে কত টাকা সুবিধা পাওয়া যায়, যাতে আপনার ভবিষ্যৎ গড়তে এই সুযোগ হাতছাড়া না হয়।

পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রী এবং বেকার যুবকদের জন্য শিক্ষা ও ক্যারিয়ার গড়ার পথে অর্থনৈতিক প্রতিবন্ধকতা একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ স্কলারশিপ এই সমস্যার সমাধান করতে পারে। আজ আমরা এমন কয়েকটি স্কলারশিপ নিয়ে বিস্তারিত জানাব, যেগুলি অনেকেই জানেন না এবং সময়মতো আবেদন করলে পড়াশোনার খরচের চিন্তা ছাড়াই নিজের ভবিষ্যৎকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।
স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপ (SVMCM)
এই স্কলারশিপ পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফে দেওয়া হয়। উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে যারা প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছেন এবং পরিবারের বার্ষিক আয় ২.৫ লাখ টাকার নিচে, তারা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। সাধারণত প্রতি মাসে ১,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হয়।
কন্যাশ্রী প্রকল্প (Kanyashree Prakalpa)
রাজ্যের মেয়েদের স্কুলে রাখার জন্য এবং উচ্চশিক্ষায় উৎসাহ দিতে এই প্রকল্প। ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী মেয়েরা যাদের বার্ষিক আয়সীমা ১.২০ লাখ টাকার মধ্যে, তারা কন্যাশ্রীতে ৭৫০ টাকা বা ১,০০০ টাকা বার্ষিক ভাতা এবং এককালীন ২৫,০০০ টাকা পেতে পারেন।
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড প্রকল্প
পশ্চিমবঙ্গে উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা এই প্রকল্পের মাধ্যমে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত শিক্ষাঋণ নিতে পারেন খুব সহজ কাগজপত্রে এবং কম সুদে। এর জন্য আবেদনকারীকে পশ্চিমবঙ্গের স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং উচ্চশিক্ষা, চাকরির কোচিং বা স্কিল ডেভেলপমেন্টের জন্য ব্যবহার করতে হবে।
জাতীয় মান্ধাতা স্কলারশিপ (NSP Scholarship)
এটি কেন্দ্রীয় সরকারের স্কলারশিপ যেটির জন্য পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রছাত্রীরাও আবেদন করতে পারেন। এখানে মেরিট কাম মিন্স স্কলারশিপ, প্রি-মেট্রিক ও পোস্ট-মেট্রিক স্কলারশিপের সুবিধা পাওয়া যায়। এটি মূলত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য, এবং পরিবারের আয়সীমা ২ লাখ থেকে ২.৫ লাখ টাকার মধ্যে হলে আবেদন করা যায়।
ওয়েস্ট বেঙ্গল মাইনরিটি স্কলারশিপ (Aikyashree Scholarship)
রাজ্যের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মুসলিম, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, পার্সি, শিখ ছাত্রছাত্রীরা এই স্কলারশিপের জন্য আবেদন করতে পারেন। প্রি-মেট্রিক, পোস্ট-মেট্রিক এবং মেরিট কাম মিন্স ভিত্তিতে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়, যা ১,০০০ থেকে ৬,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।
আবেদন পদ্ধতি কীভাবে করবেন?
- স্বামী বিবেকানন্দ মেরিট কাম মিন্স ও স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের জন্য wb.gov.in বা সংশ্লিষ্ট সরকারি পোর্টালে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে।
- NSP স্কলারশিপের জন্য scholarships.gov.in ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে হবে।
- কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য স্কুলের মাধ্যমে বা ব্লক অফিসে গিয়ে আবেদন করা যাবে।
- ঐক্যশ্রী স্কলারশিপের জন্য wbmdfcscholarship.in এ গিয়ে আবেদন করা যাবে।
প্রয়োজনীয় নথিপত্র:
✔️ পরিবারের আয়সনদ
✔️ আধার কার্ড
✔️ ব্যাংক পাসবুক
✔️ মার্কশিট
✔️ পাসপোর্ট সাইজ ফটো
✔️ ছাত্রছাত্রীর পরিচয়পত্র
কেন এই স্কলারশিপ গুরুত্বপূর্ণ?
বেকারত্বের হার কমাতে ও যুব সমাজকে দক্ষ করে তোলার জন্য এই স্কলারশিপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এর ফলে টিউশন ফি, বই কেনা, অনলাইন কোর্স ও প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার কোচিংয়ের খরচ মেটানো সহজ হয়। শিক্ষিত যুবক-যুবতীরা সরকারি চাকরি ও স্বনির্ভরতার দিকে এগিয়ে যেতে পারে।
অতএব, আপনার পরিবারে যে ছাত্রছাত্রী অর্থের অভাবে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে চাইছে বা পিছিয়ে পড়ছে, তাদের এই স্কলারশিপের বিষয়ে জানিয়ে দিন। কারণ শিক্ষা এবং দক্ষতা জীবনের উন্নতির একমাত্র পথ, আর এই সরকারি স্কলারশিপ আপনার সেই পথ সহজ করবে।