নিজস্ব সংবাদদাতা: এ জট বহুদিনের! জটের নাম আপার প্রাইমারি -এর জট। দীর্ঘ ৬ বছর পেরিয়ে ৭ বছর হতে চললো সেই ২০১৪ সালে আপার প্রাইমারি পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি প্রার্থীরা তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করছে তাদের নিয়োগের জন্য। সরকারের তাদের প্রতি এমন উদাসীন মনোভাবের জন্য আজ মঙ্গলবার বঙ্গের আপার প্রাইমারি চাকরি প্রার্থীরা তাদের নিয়োগের দাবিতে এক বৃহত্তর আন্দোলনের ডাক দেয়। বাংলায় আপার প্রাইমারি পরীক্ষায় পাশ করা চাকরিপ্রার্থীরা এক ঐক্য মঞ্চ গড়ে তোলে প্রথমে এবং তারা প্রথমদিকে ভার্চুয়ালি এবং অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন ভাবে প্রতিবাদ গড়ে তোলে। কিন্তু আজ মঙ্গলবার তারা কলকাতায় এসএসসি অফিস, করুণাময়ী থেকে বিকাশ ভবন পর্যন্ত এক অভিযানের ডাক দেন। কিন্তু পুলিশ তাদেরকে বিভিন্নভাবে বাধা দেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যায় এবং তাদেরকে ডেপুটেশন জমা দেওয়া থেকে বিরত রেখে পুলিশ পথ আটকায় তাদের।



রাজ্যের নানান স্থান থেকে এদিন অনেক আপার প্রাইমারি প্রার্থীরা কলকাতায় করুণাময়ী বাস স্ট্যান্ডে সামিল হয়। সেখান থেকে আন্দোলন অভিযানের জন্য পরিকল্পনা করতে থাকে। কিন্তু এদিন সেখানে পুলিশ খুব সক্রিয় ছিল এবং কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে সঙ্গে সঙ্গেই তাদের গ্রেফতার করতে শুরু করে। কিন্তু তাতে থেমে থাকেনি চাকরিপ্রার্থীরা। তাদের দাবি, তারা দীর্ঘ সাত বছর ধরে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন এবং কোনো ভাবেই তাদেরকে আটকানো সম্ভব নয়। হয় তাদের চাকরি দিতে হবে না হয় জেল। আর কোনো ভেলকিবাজি নয়, আর কোনো মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নয়। এবার এক স্বচ্ছ নিয়োগের মাধ্যমে দাবি চেয়ে স্থায়ী সমাধান চায় তারা।


তাদের দাবি, ২০১৪ সালের টেট নিয়ে ৪২ হাজার প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ করা হয় এবং আবার নতুন করে ১৬,৫০০ শিক্ষক নিয়োগ করা হবে, তবে তাদের বেলায় কেনো এমন বঞ্চনা, কেনো এতো অবহেলা। তারা দুঃখ বেদনায় ফেটে পড়ে এবং বেকারত্বের জ্বালায় জর্জরিত প্রতিটি আপার প্রাইমারি চাকরিপ্রার্থীরা যারা ইন্টারভিউতে সফল হন তারা ছুটে আসে বাংলার প্রতিটি প্রান্ত থেকে। পুলিশ এদিন এদের আটকাতে নানান ভাবে উঠেপড়ে লাগে। কয়েক জনকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বিধাননগর থানায়। কিন্তু চাকরিপ্রার্থীরা অনড়। তারা জানায়, তারা জেলে যেতে রাজি, কিন্তু বেকারত্বের জ্বালা ভুগে সরকারের বঞ্চনার শিকার করতে একেবারে নারাজ তারা। তাদের দাবি, যদিও প্রকাশ পেয়েছে মেরিট লিস্ট, কিন্তু হয়নি তাদের কাউন্সিলিং। তাই অতি শীঘ্রই কাউন্সিলিং নোটিশ প্রকাশ করে তাদের নিয়োগ করতে হবে। যদি সরকার তাদের কথা না মানে এবং এরকম উদাসীনতা দেখায় তবে এই বিরোধ, এই প্রতিবাদ ও আন্দোলন আমরণ অনশনের রূপ নেবে, এমনটাই দাবি তাদের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *