সারা পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যজুড়ে একেবারে উত্তর থেকে দক্ষিণবঙ্গে শুধু একটাই রব সেটি হলো প্রাইমারি টেট। রাজ্যে আগাগোড়াই এই প্রাইমারি টেট নিয়ে বিতর্কের শেষ ছিলো না। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে প্রাথমিক টেট তথা প্রাইমারি টেট নিয়ে। এবার বিরাট অনশনে পথে নেমেছেন ২০১৭ এর টেট উত্তীর্ণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীরা। তাদের মুখে মুখে এখন শুধু একটাই দাবি, একটাই স্লোগান – কোনো রকম বাড়তি প্রক্রিয়া ছাড়াই একবারে সরাসরি নিয়োগ চাই।
এদিকে রাজ্যে প্রাইমারি পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল নিজের জায়গায় একেবারে অনড়। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন যে, নিয়ম ভেঙে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালানো সম্ভব নয়। তাঁর কথা অনুযায়ী, এদের দাবি আইনসম্মত নয় এবং এরা কেউ প্যানেলভুক্ত নয়। তাই পর্ষদ সভাপতি তাদের পরামর্শ দিয়েছেন চলতি বছরের নিয়োগ তথা ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করতে।
অন্যদিকে, ২০১৪ এর টেট উত্তীর্ণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত সঙ্গে নট-ইনক্লুডেড চাকরিপ্রার্থীরা বারংবার এক্রটাই দাবি জানাচ্ছেন যে, ইতিমধ্যে তারা দু দুবার ইন্টারভিউ দিয়েছেন কিন্তু নিয়োগ পাননি। তাই আর কোনো রকম ইন্টারভিউ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে তারা নারাজ। তারা একেবারে সরাসরি নিয়োগ চাইছেন। এবং তারা রাতভর সল্টলেকের রাস্তায় অনশন করে সকালে তাদের প্রতিনিধি দলকে পাঠিয়েছেন পর্ষদ সভাপতির কাছে। সেখানে তারা স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন ঠিকই তবে গৌতম বাবুর একটাই কথা, তিনি এই দাবি মানতে নারাজ এবং এভাবে নিয়োগ সম্ভব নয়।
অবশ্য সাংবাদিক সম্মেলনে তথা বৈঠকে সভাপতি গৌতম পাল কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন। তাঁর কথায়, এযাবৎ ১৬ হাজারেরও ওপরে টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা রয়েছেন এবং তারা সবাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। তাদের এভাবে নিয়োগ দিতে গেলে ২০১৬ এর আইনকে অমান্য করতে হয়, যেটি করতে তিনি একেবারেই রাজী নন। তিনি জানিয়েছেন যে, পর্ষদ কোনো অবৈধ কাজ করবেন না এবং কোনো নিয়ম ভাঙবেন না। নিয়োগ হবে নিয়ম মেনে, একদম স্বচ্ছ ভাবে। সেক্ষেত্রে ২০১৪ এর উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নিয়োগে অংশ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বছরে দুবার করে টেট নেওয়া হবে। তাই আর কেউ বেকার পড়ে থাকবে না বলে আশাবাদী পর্ষদ সভাপতি। যাইহোক, চলতি নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ২০১২, ২০১৪ এবং ২০১৭ এর টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরা সবাই একসঙ্গে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
অনশন থেকে বসে ২০১৪ টেট পাশ প্রার্থীরা একই কথা জানিয়েছেন বারবার সেটি হলো তারা ২০১৭ এর সঙ্গে অংশগ্রহণ করবেন না। আগে তাদের সবার নিয়োগ হোক তারপর অন্য নিয়োগ। তবে কী হবে ২০১৭ এর টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ। পর্ষদ থেকে ১১ হাজার শূন্যপদে নিয়োগের ঘোষণা করা হয়ছে ঠিকই তবে এখনও অনেকেই এই শূন্যপদের হিসাব নিয়ে অন্ধকারে রয়েছেন। ২০১৪ এর টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের দাবি, এই শূন্যপদের নিয়োগে ২০১৭ এর উত্তীর্ণ প্রার্থীরাও আবেদন করতে পারবে, তাই তাদের সুযোগ অনেকটা কমে গেলো।
অন্যদিকে ২০১৭ এর টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তরফ থেকে বলতে শোনা যায়, তারা ২০১৪ এর টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীদের অবমাননা করবেন না। কিন্তু তারা অর্থাৎ ২০১৭ টেট উত্তীর্ণ প্রার্থীরাও দীর্ঘ দিন যাবৎ বঞ্চিত থেকেছেন। তারাও অনেক কষ্ট করে পড়াশোনা করে পরীক্ষায় পাশ করেছেন। তাই তারাও খুব দ্রুত নিয়োগের দাবি জানাচ্ছেন তারা।
আরেকদিকে ২০২২ এর নতুন টেট আগামী ১১ ডিসেম্বর, ২০২২ তারিখে। তবে সেখানেও জল্পনার শেষ নেই। তাদের মূলত শূন্যপদ নিয়ে একেবারে অন্ধকারে রাখা হয়েছে। একদিকে ২০১৪ এর নিয়োগ জল্পনা, ২০১৭ এর কবে ইন্টারভিউ এবং সবার নিয়োগের অনিশ্চয়তা এবং ২০২২ এর নতুন টেট এর শূন্যপদের হিসাব না থাকা ইত্যাদি নানান টানাপোড়েনের মধ্য দিয়ে চলছে পর্ষদ। কী হবে প্রাইমারি টেট এর ভবিষ্যত? সবই সময়ের অপেক্ষা।
ভবিষ্যতে প্রাইমারি টেট এর এরকম আরো আপডেট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন। আপনি যদি একজন সরকারি চাকরি প্রার্থী হয়ে থাকেন তবে নিয়মিত চাকরির খবর পেতে আমাদের টেলিগ্রাম চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে যান।
OFFICIAL WEBSITE: VISIT HERE
TELEGRAM CHANNEL: JOIN HERE